সৌন্দর্যের জন্য চমৎকার খাবার বাদাম

বিশেষ প্রতিবেদকঃ বাদাম শুধু সুস্বাদু নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম বাদাম থেকে পাওয়া যায় ৫০০ থেকে ৬০০ ক্যালরি শক্তি। বাদামের প্রকারভেদে এই ক্যালরির পরিমাণে কিছুটা তারতম্য হয়। এতে থাকা অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়াতে সাহায্য করে। এইচডিএল দেহের বিভিন্ন স্থান থেকে কোলেস্টেরল সরিয়ে নিয়ে গিয়ে লিভারে পৌঁছে দেয়, যেখানে তা রূপান্তরিত হয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এতে হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।

বাদামে আছে প্রোটিন, ভিটামিন ই, থায়ামিন, নায়াসিন, ভিটামিন বি৬, ফলিক অ্যাসিড, জিংক, কপার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও সেলেনিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। এসব উপাদান আমাদের দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বকের যত্নে ভূমিকা রাখে।

কতটা বাদাম খাবেন?

পুষ্টিবিদরা বলছেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন ৩০ গ্রাম বাদামই যথেষ্ট। সাধারণভাবে এক মুঠো বাদামেই এই পরিমাণ হয়ে যায়। চাইলে এই ৩০ গ্রাম বাদাম একবারে কিংবা ভাগ করে দিনে কয়েকবার খাওয়া যেতে পারে।

বেশি খেলেই সমস্যা

তবে মনে রাখা জরুরি, একবারে বেশি বাদাম খাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত বাদাম খেলে অ্যাসিডিটি, বমি বমি ভাব ও পেটের অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। সারা দিনে অতিরিক্ত বাদাম খেলে ক্যালরির মাত্রা বেড়ে গিয়ে ওজন বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। সেই সঙ্গে বাদামে থাকা আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে, তাই পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কোন ধরনের বাদাম খাবেন?

বাজারে নানা ধরনের লবণ, চিনি ও মসলা দেওয়া বাদাম পাওয়া যায়, যা স্বাদের দিক থেকে আকর্ষণীয় হলেও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে সল্টেড, রোস্টেড বা প্রিজারভেটিভ দেওয়া বাদাম এড়িয়ে চলাই ভালো। অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর তেলে ভাজা বাদাম শরীরের ক্ষতি করে।

অ্যালার্জির ব্যাপারে সতর্কতা

কেউ কেউ বাদামের প্রতি অ্যালার্জিতে ভোগেন। নতুন কোনো বাদাম প্রথমবার খাওয়ার সময় অল্প পরিমাণে খেয়ে প্রতিক্রিয়া দেখুন। কোনো সমস্যা না হলে পরের বার ৩০ গ্রাম পর্যন্ত খাওয়া যেতে পারে।

বিশেষ অবস্থায় কী করবেন?

কিডনির সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য বাদাম খাওয়া নিয়ন্ত্রণ জরুরি। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বাদাম খাওয়া উচিত নয়।

স্বাস্থ্যকর উপায়ে উপভোগ করুন

বাদামকে আরও স্বাস্থ্যকরভাবে খেতে চাইলে টক দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে বা একটি কলার সঙ্গে স্ন্যাকস হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। এতে স্বাদও বাড়বে, পেটও ভরবে, আবার বাদামের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, বাদাম একটি সুপারফুড। তবে সুস্থ থাকতে হলে বাদাম খেতে হবে পরিমিত ও সচেতনভাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *