জোবায়েদ হত্যা মামলা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকঃ ‘পুলিশ প্রশাসন জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ড নিয়ে ডিএমপির সংবাদ সম্মেলনে ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প সাজানোর চেষ্টা করছেন’ বলে অভিযোগ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদদীন।

বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন অধ্যাপক মো. রইছ উদদীন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি আজকের এ সংবাদ সম্মেলন থেকে স্পষ্ট করে যে বিষয়টি বলতে চাই, বর্ষা যদি জোবায়েদকে পছন্দ করে থাকে তাহলে সেটি বর্ষার বিষয়। জোবায়েদের সাথে বর্ষার যদি কোনো সম্পর্ক থেকেই থাকতো সেটা তার বাবা মা জানতো। তারা যদি জোবায়েদকে অপছন্দ করতো তাহলে তাকে এতদিন টিউশনিতে রাখত না।

অধ্যাপক মো. রইছ উদদীন বলেন, জোবায়েদ সম্পর্কে তার বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তার রাজনৈতিক সহকর্মীরা সবাই সাক্ষ্য দিবে সেই কেমন ধরনের ছেলে। সুতরাং তাকে কেউ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করবেন না। সুতরাং ত্রিভুজ প্রেমের গল্প সাজিয়ে  জোবায়েদের কেউ চরিত্র হননের চেষ্টা করলে আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে দিতে চাই, ‘তার ফলাফল ভালো হবে না’।

তিনি আরও বলেন, জোবায়েদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমাদের কিছু বিষয়ে সংশয় রয়েছে। এ সময় তিনি জোবায়েদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—

১. জোবায়েদকে হত্যার আগে তার ছাত্রী বর্ষা তাকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে স্থান নিশ্চিত হয়। পরবর্তীতে তার স্থান চেক করে, বিষয়টা স্বীকারোক্তি দিয়েছে ছাত্রী বর্ষা কিন্তু এজাহার থেকে এটি কেন বাদ দেয়া হলো? সেটা কি ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেয়া হয়েছে নাকি?

২. সিসিটিভির ফুটেজে দুইজন ব্যক্তির মধ্যে একজন কালো টিশার্ট পড়া, আরেকজন লাল টিশার্ট পড়া ছিল। এই দু’জনই কি গ্রেফতার হওয়া সে দু’জন কি-না আমরা কীভাবে নিশ্চিত হবো? সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রমাণ জব্দ করেছে কি-না আমরা তা জানতে চাই?

৩. পুলিশ যে বিবৃতি দিয়েছে হত্যার সময় সেখানে ধস্তাধস্তি হয়েছে আমরা দেখি ধস্তাধস্তির সময় আশেপাশে অনেকে জড়ো হয়। তাহলে ওই বাসায় যে হট্টগোল হয়েছে ওই বাসার সব মানুষ দেখেছে কি-না এবং পুলিশ প্রশাসন তাদের জবানবন্দি নিয়েছে কি-না?

৪. পুরো ঘটনার সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আসা হয়েছে কি-না এবং জবানবন্দির সবকিছু স্পষ্ট করতে হবে আমাদের?

৫. অভিযুক্ত বর্ষার বাবা-মায়ের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে কি-না? যদি তারা এ ঘটনায় সমর্থন দিয়ে থাকে তাহলে তাদের কাউকে কেন মামলার আসামি করা হয়নি বিষয়টি পুলিশকে ব্যাখ্যা দিতে হবে?

৬. মাহিরের উচ্চতা জোবায়েদের উচ্চতা অনেক তফাৎ সুতরাং সে জায়গা থেকে হত্যা করা সম্ভব কি-না? একটি মাত্র আঘাতেই হত্যা করা হয়েছে এটা কীভাবে সম্ভব?

৭. সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ বলেছ, ক্ষোভ থেকে হত্যা করা হয়েছে জোবায়েদকে কিন্তু আমরা জানি ক্ষোভ থেকে কাউকে হত্যা করলে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। তাহলে এক আঘাতেই হত্যা করা হয়েছে জোবায়েদকে এটা পেশাদার খুনি ছাড়া কেউ করতে পারার কথা না। আমাদের প্রশ্ন? অন্য কাউকে দিয়ে হত্যা করিয়ে মাহিরকে ফাঁসানো হয়েছে কি-না?

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, চেয়ারম্যান, শাখা ছাত্রদল, ছাত্র শিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতৃবৃন্দ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *