এসএম বদরুল আলমঃ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল (ইএম) কারখানা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ (স্মারক নং-২৫.০০.০০০০.০১৩.২৭.০০২.২৪.৭৪১) ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে জারি করা হয়।

সূত্রগুলো জানায়, নির্বাহী প্রকৌশলী ইউসুফের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতি, কমিশন বাণিজ্য, অনিয়ম ও ঠিকাদার সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে। তিনি কথিতভাবে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেলেও সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি নিজেকে ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে জাল সিল ও প্যাড ব্যবহার করেছেন বলেও জানা গেছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পে তিনি নিজের পছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করান এবং কমিশন ছাড়া কোনো কাজের অনুমোদন দেন না—এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। তার কমিশনের হার নাকি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। এমনকি একাধিক ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। আগারগাঁওয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শুধু তাই নয়, তার প্রভাবে ইএম কারখানা বিভাগে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। নিলামের নামে ৮ লাখ টাকার কমিশন নেওয়া, সংসদ সচিবালয়ের ১১২ ফ্ল্যাট প্রকল্পে কাজ না করেও পুরো বিল তোলা, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিম্নমানের সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে কোটি টাকার বরাদ্দ আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, ইউসুফ বর্তমানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। নাম-বেনামি ব্যাংক হিসাব ও সম্পত্তির মাধ্যমে তিনি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এমনকি নিয়োগ, বদলি ও পদায়নেও তার সিন্ডিকেটের প্রভাব আছে বলে জানা গেছে।

সবশেষে, মন্ত্রণালয়ের এই তদন্ত নির্দেশনার পর এখন দেখা যাবে, গণপূর্তের প্রভাবশালী এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর কতটা সত্যতা প্রকাশ পায় এবং কর্তৃপক্ষ আদৌ কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেয় কি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *